HEALTH TIPS
চুল ঝরবে না আর
চুল পড়ার কয়েকটি কারণ হলো থাইরয়েডে সমস্যা, খুশকি, অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্নতা।পুরুষের মাথা থেকেই সাধারণত চুল ঝরে বেশি। তাই টাক সমস্যার তাক লাগানো সব বিজ্ঞাপনের ভিড়ে পুরুষকে যেমন নাকাল হতে হয়, তেমনি মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েন তাঁরা। চুল পড়া রোধে প্রথম ব্যবস্থা হিসেবে শরীরে জোগান দিতে হবে প্রয়োজনীয় ভিটামিনগুলো। জন্মগত কিছু ত্রুটি ছাড়া অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পুরুষের চুল পড়ে যায় ভিটামিনের অভাবে। কী সেই ভিটামিন আর কেমন করেই বা ভিটামিনগুলো আমাদের চুল পড়া রোধে ভূমিকা রাখে? জেনে নেওয়া যাক এবার। চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য সেবাম গ্রন্থি খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আর এই গ্রন্থির সুস্থতার জন্য ভিটামিন এ খুব দরকারি। ভিটামিন বি কমপ্লেক্স হলো আটটি ভিটামিনের সমষ্টি। শরীরে লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স একদিকে যেমন মুখ্য ভূমিকা রাখে, অন্যদিকে চুলের গোড়ায় প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান পৌঁছে দেয়। এভাবেই চুল তার প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেয়ে বাড়বাড়ন্ত হয়। ভিটামিন সিতে থাকে শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট চুলকে সুস্থ যেমন রাখে, তেমনি বৃদ্ধি করে চুলের সৌন্দর্য। ভিটামিন ইর আছে লোহিত রক্তকণিকায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা। তার চেয়েও বড় কথা, ভিটামিন ই মাথার সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম সব রক্তনালিকায় রক্তের প্রবাহ ঠিক রাখে আর পৌঁছে দেয় অক্সিজেন। তাই চুল পড়ার প্রবণতাও কমে যায় অনেকখানি। এ ছাড়া সুস্থ চুল আর তার স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য আরও প্রয়োজন জিংক, প্রোটিন, আয়রন, কপার ও ম্যাগনেসিয়াম।
চুল পড়া কমাতে
চুল পড়া নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। চুল পড়ছে। কী যে করি! এমন কথা প্রায়ই শোনা যায়। আর গরমে চুল পড়ার হার তুলনামূলকভাবে একটু বাড়ে। তাই বলে তো বসে থাকলে চলবে না। চুল পড়া কমানোর সমাধান দিয়েছেন কিউবেলার রূপবিশেষজ্ঞ ফারজানা আরমান। তিনি জানান, গ্রীষ্মকালে মাথার ত্বকের ধরন পরিবর্তন হয়। ত্বকের গ্রন্থি থেকে অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ হয়। ফলে চুল তৈলাক্ত হয়ে পড়ে। আবহাওয়ার এই পরিবর্তনের কারণে চুল পড়ে অনেক সময়। এ ছাড়া চুলের গোড়ার ঘাম না শুকালে, অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার খেলে, চুলের ধরনের সঙ্গে মানানসই নয় এমন শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করলে সাধারণত চুল পড়ে।
আর এসব থেকে মুক্তি পেতে কী করবেন? ফারজানা আরমান মনে করেন, সঠিক খাদ্যাভ্যাস থাকলে আমাদের চুল পড়ার হার অনেকটা কমে আসবে। তবে প্রতিদিন ১০০টি চুল পড়লে চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। পুষ্টিযুক্ত পরিমিত খাবার খেলে তা চুলেও পুষ্টি জোগায়। খাদ্য তালিকায় অবশ্যই ফল, সবজি থাকতে হবে। এসব খাবার খেলে চুলের গোড়া শক্ত হয়। ফলে চুল পড়া কমে যায়। এ ছাড়া চুলের গোড়ায় তেল ও ময়লা জমার কারণেও চুল পড়ে। সে জন্য খুব ভালো হয় ঘন শ্যাম্পু ব্যবহার না করে একটু পাতলা ধরনের শ্যাম্পু ব্যবহার করলে। ঘন শ্যাম্পু হলে তার সঙ্গে সামান্য পরিমাণে পানি মিশিয়ে নিতে পারেন। শ্যাম্পু দিয়ে মোটা চিরুনি বা ব্রাশ দিয়ে চুলের আগাগোড়া আঁচড়িয়ে ফেলুন। এরপর পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন, যাতে চুলে কোনো শ্যাম্পু না থাকে। এভাবে প্রতিদিন চুলে শ্যাম্পু করা যেতে পারে। এবার ব্যবহার করুন কন্ডিশনার। কন্ডিশনার কখনোই চুলের গোড়ায় লাগাবেন না। সারা মাথার চুলে কন্ডিশনার লাগিয়ে দু-তিন মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
চুল পড়া কমাতে যা ব্যবহার করবেন
লিভ ইন কন্ডিশনার: সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে চুলকে রক্ষা করে লিভ ইন কন্ডিশনার। রং করা চুল কিংবা কোঁকড়া চুলের জন্য এ কন্ডিশনারটি ব্যবহার করা ভালো।
প্রাকৃতিক কন্ডিশনার: শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধোয়ার পর পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন চুল ঝরঝরে হয়ে গেছে। এ ছাড়া সাদা সিরকাও এভাবে প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
হট অয়েল ট্রিটমেন্ট: তৈলাক্ত চুলসহ যেকোনো চুলের জন্য এটি উপকারী। তেল হালকা গরম করে তুলা বা হাত দিয়ে হালকা করে মাথার ত্বকে ঘষে লাগান। আধা ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে ফেলুন।
টু-ইন শ্যাম্পু: যেসব শ্যাম্পুর গায়ে টু-ইন লেখা থাকে তা এ দেশের আবহাওয়ার জন্য খুব একটা উপযোগী নয়। একনাগাড়ে এ ধরনের শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত নয়।
লিভ ইন কন্ডিশনার: সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে চুলকে রক্ষা করে লিভ ইন কন্ডিশনার। রং করা চুল কিংবা কোঁকড়া চুলের জন্য এ কন্ডিশনারটি ব্যবহার করা ভালো।
প্রাকৃতিক কন্ডিশনার: শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধোয়ার পর পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন চুল ঝরঝরে হয়ে গেছে। এ ছাড়া সাদা সিরকাও এভাবে প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
হট অয়েল ট্রিটমেন্ট: তৈলাক্ত চুলসহ যেকোনো চুলের জন্য এটি উপকারী। তেল হালকা গরম করে তুলা বা হাত দিয়ে হালকা করে মাথার ত্বকে ঘষে লাগান। আধা ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে ফেলুন।
টু-ইন শ্যাম্পু: যেসব শ্যাম্পুর গায়ে টু-ইন লেখা থাকে তা এ দেশের আবহাওয়ার জন্য খুব একটা উপযোগী নয়। একনাগাড়ে এ ধরনের শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত নয়।
চুলের প্যাক
হেনা, সামান্য পরিমাণে টকদই ও ডিমের মিশ্রণ।
ডিম, মাখন, সামান্য পরিমাণে পানি ও জাম্বুরার রস মিশিয়ে ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
জলপাই তেল, ১০ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার তেল মিশিয়ে হালকা গরম করে এর মধ্যে দুটি ভিটামিন ‘ই’ ক্যাপসুল মিশিয়ে তা চুলে দিন। সম্ভব হলে চুলে গরম পানির ভাপ দিতে পারেন। এ জন্য তোয়ালে গরম পানিতে ডুবিয়ে নিন। এরপর এর পানি ঝরিয়ে মাথায় জড়িয়ে রাখুন। ১০ মিনিট পর চুল ধুয়ে ফেলুন।
পাকা কলা, এক চামচ টকদই ও এক চামচ জলপাই তেল মিশিয়ে চুলে লাগাতে পারেন।
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের চর্মরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রাশেদ মোহাম্মদ খান বলেন, মানসিক চাপ, বড় অসুখের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, মাথার ত্বকে চর্মরোগ, বংশগতির কারণেও চুল পড়ে। তবে চুল পড়া কমাতে প্রধানত চুলে পুষ্টি জোগাতে হবে। সে জন্য তেল-মসলাযুক্ত খাবার, চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে এবং মানসিক চাপ কমাতে হবে। এ ছাড়া সময়মতো খাওয়া-ঘুমানো ও পানি পরিমাণমতো পান করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, শ্যাম্পু করার সময় যেন নখের আঁচড় মাথার ত্বকে না লাগে।
আরেকটি বিষয় হলো, চুল পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা গজিয়ে যায়। সে কারণে এটি নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তার কিছু নেই। খুশকি দূর না হলেও চুল পড়ে। খুশকি থাকলে সপ্তাহে দুই দিন খুশকি প্রতিরোধী শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। অন্যান্য দিন প্রোটিন, অ্যামাইনো প্রোটিন সমৃদ্ধ শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এর ফলে চুলের গোড়া শক্ত হয়। নিয়মিত জলপাই তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে জেল ও চুলের স্প্রে কম ব্যবহার করাই ভালো। এতে চুলের ক্ষতি কম হয়। আসল কথা হলো, চুলকে পরিষ্কার রাখতে হবে। তবেই দেখবেন চুল পড়া কমে গেছে।
হেনা, সামান্য পরিমাণে টকদই ও ডিমের মিশ্রণ।
ডিম, মাখন, সামান্য পরিমাণে পানি ও জাম্বুরার রস মিশিয়ে ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
জলপাই তেল, ১০ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার তেল মিশিয়ে হালকা গরম করে এর মধ্যে দুটি ভিটামিন ‘ই’ ক্যাপসুল মিশিয়ে তা চুলে দিন। সম্ভব হলে চুলে গরম পানির ভাপ দিতে পারেন। এ জন্য তোয়ালে গরম পানিতে ডুবিয়ে নিন। এরপর এর পানি ঝরিয়ে মাথায় জড়িয়ে রাখুন। ১০ মিনিট পর চুল ধুয়ে ফেলুন।
পাকা কলা, এক চামচ টকদই ও এক চামচ জলপাই তেল মিশিয়ে চুলে লাগাতে পারেন।
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের চর্মরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রাশেদ মোহাম্মদ খান বলেন, মানসিক চাপ, বড় অসুখের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, মাথার ত্বকে চর্মরোগ, বংশগতির কারণেও চুল পড়ে। তবে চুল পড়া কমাতে প্রধানত চুলে পুষ্টি জোগাতে হবে। সে জন্য তেল-মসলাযুক্ত খাবার, চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে এবং মানসিক চাপ কমাতে হবে। এ ছাড়া সময়মতো খাওয়া-ঘুমানো ও পানি পরিমাণমতো পান করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, শ্যাম্পু করার সময় যেন নখের আঁচড় মাথার ত্বকে না লাগে।
আরেকটি বিষয় হলো, চুল পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা গজিয়ে যায়। সে কারণে এটি নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তার কিছু নেই। খুশকি দূর না হলেও চুল পড়ে। খুশকি থাকলে সপ্তাহে দুই দিন খুশকি প্রতিরোধী শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। অন্যান্য দিন প্রোটিন, অ্যামাইনো প্রোটিন সমৃদ্ধ শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এর ফলে চুলের গোড়া শক্ত হয়। নিয়মিত জলপাই তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে জেল ও চুলের স্প্রে কম ব্যবহার করাই ভালো। এতে চুলের ক্ষতি কম হয়। আসল কথা হলো, চুলকে পরিষ্কার রাখতে হবে। তবেই দেখবেন চুল পড়া কমে গেছে।
চুল উঠাটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বংশগত। বাকিটা পরিবেশের জন্য, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাবে হয়।
পানিতে তুলনামূল ভাবে আয়রণ বেশি থাকলে সব কিছুর জন্যই ক্ষতিকর। কলের পানির তুলনায় পুকুরের পানিতে আয়রণ কম। গোসলের জন্য পুকুরের পানি ব্যবহার করতে পারেন। আর মাথায় গরম পানি দেবেন না।
বেশিক্ষণ পানিতে থাকবেন না। গোসল করেই গায়ের পানি মুছে ফেলবেন। এবং সাথে সাথেই হালকা লোসন লাগাবেন। রোদে যাবেন না। প্রচুর পানি, শাকসবজি ও ফলমূল খাবেন। রাত জাগবেন না। রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমাবেন অনেক।
পানিতে তুলনামূল ভাবে আয়রণ বেশি থাকলে সব কিছুর জন্যই ক্ষতিকর। কলের পানির তুলনায় পুকুরের পানিতে আয়রণ কম। গোসলের জন্য পুকুরের পানি ব্যবহার করতে পারেন। আর মাথায় গরম পানি দেবেন না।
বেশিক্ষণ পানিতে থাকবেন না। গোসল করেই গায়ের পানি মুছে ফেলবেন। এবং সাথে সাথেই হালকা লোসন লাগাবেন। রোদে যাবেন না। প্রচুর পানি, শাকসবজি ও ফলমূল খাবেন। রাত জাগবেন না। রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমাবেন অনেক।
চুলের সমস্যা ও স মা ধা ন
চুলের সমস্যা ও স মা ধা ন
প্রতিদিন বাইরে বেরোলেই রোদে পুড়ে আর ধূলোবালি লেগে আপনার চুল হয়ে যায় রুক্ষ। তাছাড়া বাতাসে আর্দ্রতার অভাবেও চুলের চকচকে ভাব নষ্ট হয়ে যায়। চুল হয়ে যায় শুষ্ক। এতে দেখা যায় চুল পড়া সহ নানা সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানে চাই সঠিক পরিচর্যা। চুলের সঠিক পরিচর্যার জন্য কিছু পরামর্শ এখানে তুলে ধরা হলো-
অয়েলিং
০০ চুলের রুক্ষভাব কমাতে সপ্তাহে কমপক্ষে একদিন মাথায় হট অয়েল মাসাজ করা উচিত।
এছাড়াও মধু ও অলিভ অয়েল সমপরিমাণে মিশিয়ে ১২ ঘন্টা রেখে চুলের গোড়ায় লাগান। লেবু, জবা ফুলের রস, নারকেল তেল মিশিয়ে তুলো দিয়ে চুলের গোড়ায় লাগাতে পারেন।
শ্যাম্পু
০০ নারকেল তেল, ডিম, পাতিলেবুর রস মিশিয়ে চুলে কিছুক্ষণ লাগিয়ে রাখুন, তারপর রিঠা, আমলকী, শিকাকাই দেওয়া শ্যাম্পু বা প্রোটিন সমৃদ্ধ শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।
কন্ডিশনার
০০ শ্যাম্পু করার পর চুলের কন্ডিশনিং জরুরি-বিশেষ করে শুষ্ক ও রুক্ষ চুলের জন্য অত্যাবশ্যক। বাজারে বিভিন্ন ধরনের কন্ডিশনার পাওয়া যায়। চুলের ধরণ অনুযায়ী ভাল একটি কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
খুশকি
০০ মেথিগুঁড়ো আর টক দই মিশিয়ে সপ্তাহে একবার মাথায় লাগান, আধ ঘন্টা পর শ্যাম্পু করুন।
০০ পাতিলেবুর রস ও আমলকীর রস মিশিয়ে চুলের গোড়ায় লাগিয়ে ১ ঘন্টা পর শ্যাম্পু করে ফেলুন, খুশকিতে উপকার পাবেন।
রুক্ষ চুল
০০ ঘন ঘন শ্যাম্পু করা চুলের জন্য ক্ষতিকর।
০০ চুলের ময়শ্চার বজায় রাখতে ভাল কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
০০ হেনা, দুধ, ডিম, চায়ের লিকার মিশিয়ে চুলে লাগান। আধ ঘন্টা পর হার্বাল শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
০০ তিলের তেল, মধু, পাকা পেঁপে মিশিয়ে চুলের গোড়া থেকে ডগা পর্যন্ত লাগান। ১ ঘন্টা পর শ্যাম্পু করুন।
নিয়মিত এবং সঠিক পরিচর্যার ফলে চুল পড়া রোধ করা সম্ভব। তাই অবহেলা না করে এখনই চুলের প্রতি যত্নশীল হোন।
খুশকির কারণ ও চিকিৎসা
খুশকি খুবই সাধারণ সমস্যা। প্রায় প্রত্যেক মানুষের মাথায় জীবনে কোনো না কোনো সময় খুশকি হয়েছে। মাথার ত্বক বা স্ক্যাল্পে সব সময় কিছু নতুন কোষ হয় আর কিছু পুরনো কোষ ঝরে যায়। এটা একটা চক্র। কিন্তু যখন পুরনো মরা কোষ জমে যায় এবং ফাঙ্গাস সংক্রমিত হয় তখন খুশকি হয়। মাথা থেকে সাদা আঁশের মতো গুঁড়া পড়তে থাকে এবং সেই সাথে চুলকানি হয়।
খুশকির কারণ
তেলের ব্যবহার : প্রচুর তেলের ব্যবহার খুশকি হওয়ার একটি কারণ। মাথার ত্বক তেলের কারণে চিটটিটে হয়ে খুশকি হয়। আবার তেল ব্যবহার করলে খুশকি হয়েছে সেটা বোঝা যায় না।
যথাযথ শ্যাম্পু ব্যবহার না করা : যথাযথ শ্যাম্পু ব্যবহার না করার কারণেও খুশকি হতে পারে। মাথার ত্বক বা স্ক্যাল্প তৈলাক্ত হলেও খুশকি হওয়ার প্রবণতা থাকে। কিশোর বা তরুণ বয়সে ব্রণের সাথে খুশকিও খুব স্বাভাবিক সমস্যা।
স্ক্যাল্প অত্যাধিক শুষ্ক হলেও খুশকি হতে পারে।
কিন্তু ত্বক সমস্যা যেমন সেবোরিক ডার্মাটাইটিস, সোরিয়াসিস, একজিমা, ফাঙ্গাল ইনফেকশন এবং অন্যান্য ব্যাক্টেরিয়াল ইনফেকশন বা সংক্রমণ খুশকির মতো মনে হতে পারে। মানসিক দুশ্চিন্তার কারণেও মাথায় খুশকি হয়।
খুশকি সমস্যার সমাধান
প্রথমেই মাথায় তেল ব্যবহার করা বন্ধ করুন। তারপর শ্যাম্পু বদলে ফেলুন। খুশকিনাশক শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। জেড পিটি অর্থাৎ জিংক পাইরিথিওনযুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন। পরের সপ্তাহে একদিন করে পরের এক মাসে ব্যবহার করবেন। এতে কোনো উপকার না হলে এক বা দুই শতাংশ কিটোকোনাজলযুক্ত শ্যাম্পুও উপরিউক্ত নিয়মে ব্যবহার করতে হবে। আর স্ক্যাল্প যদি শুষ্ক প্রকৃতির হয় তবে শ্যাম্পু করার আগের রাতে অলিভ তেল মাথায় লাগাতে পারেন অথবা শ্যাম্পু করার ২ ঘন্টা আগেও অলিভ তেল লাগাতে পারেন। এর পরও সমস্যা থাকলেও অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। রোগের কারণে খুশকি হলে তার যথাযথ চিকিৎসা প্রয়োজন
খুশকি থেকে দূরে থাকুন
শীতকালটা রুক্ষ। আবহাওয়া হোক বা ত্বক, সব ক্ষেত্রেই দেখা যায় এই রুক্ষতা। দরকার তাই বাড়তি যত্নের। রূপবিশেষজ্ঞ কানিজ আলমাস খান জানাচ্ছেন বিস্তারিত। শীতের রুক্ষতায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় মূলত চুলের। এমনিতেই চুল শরীরের সবচেয়ে উপরিভাগে থাকে বলে এর ওপর ধকল যায় বেশি। এ রুক্ষতায় আক্রান্ত হয় মাথার ত্বক পর্যন্ত। তাই চুলের যত্নের সঙ্গে বাড়তি খেয়াল দিতে হয়ে মাথার ত্বকের প্রতিও।
রুক্ষতার ফলে ত্বকের যেসব উপসর্গ দেখা যায় তার মধ্যে শীতকালে খুশকি সবার ক্ষেত্রে সাধারণ একটি সমস্যা। খুশকির ফলে চুল কমে যায়। মসৃণতা ও ঔজ্জ্বল্যেও ভাটা পড়ে। ফলস্বরূপ চেহারায় চলে আসে পানসে ভাব। শীতের শুরুতেই তাই খুশকির সমস্যাকে গুরুত্বের সঙ্গে মোকাবিলা করা উচিত। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন নারকেল তেল ভালোভাবে ঘষে মাথার ত্বকে লাগাতে হবে। আধা ঘণ্টা রেখে একটি তোয়ালে গরম পানিতে ভিজিয়ে পুরো মাথায় পেঁচিয়ে রাখতে হবে। গরম ভাপ ত্বকের কোষ খুলে ময়লা বেরিয়ে যেতে সাহায্য করে।
১৫-২০ মিনিট পর মাথা ও চুল ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। খুশকির সংক্রমণ ত্বকের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বিভিন্ন হতে পারে। কারও আঠালো, আবার কারও বা শুষ্ক। ত্বক বুঝে ত্বকের যত্ন নেওয়াটা জরুরি। তবে সাধারণ একটি প্যাক যেকোনো ত্বকে ব্যবহার করা যেতে পারে। টকদই ভালোভাবে ব্লেন্ড করে তার সঙ্গে লেবুর রস ও মসুর ডাল বাটা মিশিয়ে চুলের গোড়ায় দিয়ে রাখতে হবে। আধা ঘণ্টা পর চুল ভালো করে ধুয়ে খুশকি-প্রতিরোধী শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধুয়ে নিতে হবে। মনে রাখা জরুরি, চুল যদি ভালো করে পরিষ্কার না করা হয়, তবে অপরিষ্কার চুল থেকেও আবার খুশকি সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে।
কেউ যদি বেশি ঠান্ডা পানি না লাগাতে চান মাথায়, তবে পানি কুসুম গরম করে নিতে পারেন। তবে বেশি গরম পানি চুলে ব্যবহার করা যাবে না। এতে চুল শুষ্ক, রুক্ষ ও অনুজ্জ্বল হয়ে পড়ে। রং নষ্ট হয়ে যায়। চুলের আগা ফেটে যায়। এমনকি চুল পড়ে খুব দ্রুত।
ঋতুর পালাবদলে প্রকৃতির সঙ্গে ত্বককে মানিয়ে চলতেই হয়। এ ক্ষেত্রে আপনার নিজের খানিকটা সহযোগিতা পেলে ত্বক পায় স্বস্তি।
সুন্দর চুলের জন্য
চুল কেরাটিন নামের এক রকম প্রোটিন দিয়ে তৈরি হয়। চুলে ৯৭ ভাগ প্রোটিন ও ৩ ভাগ পানি রয়েছে। চুলের যেটুকু আমরা দেখি সেটি মৃত কোষ। কারণ এতে অনুভূতিশীল কোনো কোষ নেই। একজন সুস্থ মানুষের মাথায় গড়ে ১ লাখ থেকে দেড় লাখ চুল থাকে। প্রতিদিন ১০০টি পর্যন্ত চুল ঝরে পড়া স্বাভাবিক। এর থেকে বেশি চুল পড়লে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। গ্রীষ্মকালে চুল দ্রুত বড় হয় কিন্তু শীতকালে কম বড় হয়। একটি চুলের গড় আয়ু দুই-আট বছর। সুতরাং চুল কিছু না কিছু প্রতিদিন স্বাভাবিকভাবেই ঝরে যায়।
চুলের কিউটিকন নষ্ট হয়ে গিয়ে চুলের কটেক্সের আঁশগুলো খুলে গেলে চুলের আগ ফেটে যায়। এতে চুল শুষ্ক ও ভঙ্গুর হয়ে ওঠে। মাথার তালুর সঠিক মাত্রায় রক্ত সঞ্চালনের জন্য চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ দরকার। নানারকম শারীরিক অসুস্থতা ছাড়াও সঠিক পরিচর্যার অভাবে চুলের স্বাস্থ্যও খারাপ হতে পারে। আপনার সুস্থতা প্রকাশ পায় আপনার শারীরিক স্বাস্থ্য এবং চুলের স্বাস্থ্যের ভেতর দিয়ে। তাই সঠিক ডায়েট, প্রচুর ফলমূল, সঠিক পরিমাণে পানি পান করা, পর্যাপ্ত ব্যায়াম ও চিন্তামুক্ত ঘুম প্রয়োজন। এসব নিয়ম মেনে চললে চুলের সমস্যা সমাধান হওয়া উচিত। তবে খুশকি ও অন্যান্য সমস্যা যেমন চুল পড়া ও চুলের ডগা ফেটে যাওয়া রোধ করতে প্রয়োজন চুল ও তালু পরীক্ষা করা ও সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করা।
চুলের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা প্রয়োজন। অনেক শারীরিক অসুস্থতার লক্ষণ চুল পড়া। তাই অবহেলা না করে এর সঠিক চিকিৎসা প্রয়োজন। চুল খুব হালকা বা টাক হওয়ার আগেই চুল পড়া প্রতিরোধ করুন। সচেতন হোন।
চুল অতিরিক্ত পার্ম করা, অপর্যাপ্ত কন্ডিশনিং কিংবা অতিরিক্ত ব্রাশিংয়ের কারণে চুল ফেটে যেতে পারে। এ ছাড়া নিুমানের চিরুনি বা ব্রাশ ব্যবহার এবং সঠিকভাবে চুল না আঁচড়ানোর জন্যও এই সমস্যায় পড়তে পারেন। এ ছাড়া চুল শুকাতে গিয়েও হেয়ার ড্রায়ারের কারণে চুলের আগা ফাটতে পারে।
খুশকির কারণেও চুল শুষ্ক হয়ে ওঠে এবং চুলের আগা ফেটে যায়। চুলের আগা ফেটে গেলে খুবই অস্বাস্থ্যকর দেখায় এবং চুল বড় হয় না। এ ক্ষেত্রে খুশকির সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে পারেন। কিছু ব্যক্তিগত কারণ, যেমন হরমোনের তারতম্য, খারাপ স্বাস্থ্য, বিশ্রামের অভাব ইত্যাদির প্রভাবও চুলের ওপর পড়তে পারে। টেনশন, মানসিক যন্ত্রণা, ঘুম না হওয়া বা কম হওয়া ইত্যাদির কারণেও চুলের স্বাস্থ্য খারাপ হতে পারে। এ ছাড়া হেয়ার স্প্রে, জেল, মুজ ইত্যাদির অতি ব্যবহার এবং কৃত্রিম রঙ চুলের ক্ষতি করে।
মাথার তালুর দিকে বা ছেলেদের সামনের দিকে চুল পড়ে ফাঁকা হয়ে গেলে অবহেলা না করে চিকিৎসা করা প্রয়োজন। বর্তমানে টাক চিকিৎসায় নতুন নতুন ওষুধ সংযোজন হয়েছে। টাকের কারণ ও ধরন নির্ণয় করে সাধারণত এসব ওষুধ প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। কিছুটা দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা হলেও তা ফলপ্রসূ। সুতরাং চুলপড়া নিয়ে অকারণ দুশ্চিন্তা না করে সঠিক চিকিৎসা প্রয়োজন। নানাবিধ চটকদার বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট না হয়ে সঠিক বৈজ্ঞানিক চিকিৎসার মাধ্যমে চুল পড়ার চিকিৎসা করলে রোগী সুফল পাবেন।
চুলের যত্নে কন্ডিশনার
চুলের যত্নে কন্ডিশনারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কন্ডিশনার বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। যেমন
১। ইনস্ট্যান্ট কন্ডিশনারঃ এটি শ্যাম্পু করার পর ভেজা চুলে লাগাতে হয় এবং ২-৩ মিনিট রেখে আলতো করে ধুতে হয়। হালকা ক্ষতিগ্রস্ত চুলের জন্য উপকারী ইনস্ট্যান্ট কন্ডিশনার।
২। ডিপ/গভীর কন্ডিশনারঃ এটিও একই নিয়মে ব্যবহার করতে হয় কিন্তু ৫-১০ মিনিট চুলে রেখে দিতে হয়। রাসায়নিক উপাদানে ক্ষতিগ্রস্ত চুলের জন্য ডিপ কন্ডিশনার প্রয়োজন।
৩। লিভ ইন কন্ডিশনারঃ চুল শ্যাম্পু করার পর তোয়ালে দিয়ে ভালো করে মুছে তারপর সেই চুলে লিভ ইন কন্ডিশনার লাগাতে হয়। লিভ ইন কন্ডিশনার ধুয়ে ফেলতে হয় না।
খারাপভাবে ক্ষতিগ্রস্ত চুলের জন্য লিভ ইন কন্ডিশনার উপযুক্ত।
১। ইনস্ট্যান্ট কন্ডিশনারঃ এটি শ্যাম্পু করার পর ভেজা চুলে লাগাতে হয় এবং ২-৩ মিনিট রেখে আলতো করে ধুতে হয়। হালকা ক্ষতিগ্রস্ত চুলের জন্য উপকারী ইনস্ট্যান্ট কন্ডিশনার।
২। ডিপ/গভীর কন্ডিশনারঃ এটিও একই নিয়মে ব্যবহার করতে হয় কিন্তু ৫-১০ মিনিট চুলে রেখে দিতে হয়। রাসায়নিক উপাদানে ক্ষতিগ্রস্ত চুলের জন্য ডিপ কন্ডিশনার প্রয়োজন।
৩। লিভ ইন কন্ডিশনারঃ চুল শ্যাম্পু করার পর তোয়ালে দিয়ে ভালো করে মুছে তারপর সেই চুলে লিভ ইন কন্ডিশনার লাগাতে হয়। লিভ ইন কন্ডিশনার ধুয়ে ফেলতে হয় না।
খারাপভাবে ক্ষতিগ্রস্ত চুলের জন্য লিভ ইন কন্ডিশনার উপযুক্ত।
চুলে তেল দেয়াঃ চুলে তেল দেয়া এক ধরনের কন্ডিশনার। সাধারণভাবে বিশ্বাস করা হলেও বিশেষজ্ঞরা বলেন, তেল চুল গজাতে বা চুলে পুষ্টি জোগাতে সহায়তা করে না। তবে তেল ম্যাসাজ করলে স্ক্যালেন্ড রক্ত সঞ্চালন হয় এবং চুল বাহ্যিকভাবে চকচকে, মসৃণ হয়।
- হালকা গরম করে যেকোনো তেল মাথায় সপ্তাহে দু’দিন ম্যাসাজ করা যেতে পারে।
- শ্যাম্পু করার ১-২ ঘণ্টা আগেও তেল মাথায় লাগানো যেতে পারে।
- সুগন্ধি তেল পরিহার করাই ভালো।
- চুল স্বাভাবিকভাবেই তৈলাক্ত হলে তেল না লাগানোই ভালো। কেননা এতে খুশকি হতে পারে।
- শুষ্ক স্ক্যাল্পে অলিভ, নারিকেল, সানফ্লাওয়ার, বাদাম তেল যেকোনোটাই লাগাতে পারেন।
চুলের জন্য ব্যবহৃত কিছু সামগ্রীঃ শ্যাম্পু, কন্ডিশনার, তেল ছাড়াও চুলে বর্তমানে আরো কিছু উপাদান ব্যবহৃত হচ্ছে। এগুলো আসলে চুলের স্টাইলের কারণে ব্যবহার করা হয়।
হেয়ার স্প্রেঃ এটি এমন এক ধরনের সলিউশন যা চুল বাঁধার পরে বা স্টাইল করার পরে চুলে স্প্রে করলে চুল স্টাইলমতো থাকে। চুলের হেরফের হয় না। তবে স্প্রে চুলতে শক্ত করে দেয়। নিয়মিত ব্যবহারে চুলের জন্য ক্ষতিকরও বটে। তবে প্রয়োজনে হেয়ার স্টাইল বজায় রাখতে হেয়ার স্প্রে’র জুড়ি নেই। স্প্রে ব্যবহারের পরে চুল ভালো করে শ্যাম্পু ও কন্ডিশনিং করবেন।
হেয়ার জেলঃ তরুণ প্রজন্মের কাছে জেল খুব জনপ্রিয়। জেল দিয়ে নানাভাবে চুল আঁচড়ানো এবং বাঁধা আজকাল হাল ফ্যাশান। তবে নিয়মিত ব্যবহারে এটিও ক্ষতিকর।
মুজঃ এটি ফোমের মতো এবং চুলকে শক্ত করে না। ফোমের মতো হাতে নিয়ে চুলে মেখে তারপর চুল ব্লো ড্রাই বা অন্য স্টাইল করা হয়।
হেয়ার স্প্রেঃ এটি এমন এক ধরনের সলিউশন যা চুল বাঁধার পরে বা স্টাইল করার পরে চুলে স্প্রে করলে চুল স্টাইলমতো থাকে। চুলের হেরফের হয় না। তবে স্প্রে চুলতে শক্ত করে দেয়। নিয়মিত ব্যবহারে চুলের জন্য ক্ষতিকরও বটে। তবে প্রয়োজনে হেয়ার স্টাইল বজায় রাখতে হেয়ার স্প্রে’র জুড়ি নেই। স্প্রে ব্যবহারের পরে চুল ভালো করে শ্যাম্পু ও কন্ডিশনিং করবেন।
হেয়ার জেলঃ তরুণ প্রজন্মের কাছে জেল খুব জনপ্রিয়। জেল দিয়ে নানাভাবে চুল আঁচড়ানো এবং বাঁধা আজকাল হাল ফ্যাশান। তবে নিয়মিত ব্যবহারে এটিও ক্ষতিকর।
মুজঃ এটি ফোমের মতো এবং চুলকে শক্ত করে না। ফোমের মতো হাতে নিয়ে চুলে মেখে তারপর চুল ব্লো ড্রাই বা অন্য স্টাইল করা হয়।
মাথায় টাক সমস্যা
মাথায় গোল টাক বলতে যা বোঝায় তাকে বলা হয় এলোপেসিয়া.
নামটাই যেন বলে দিচ্ছে টাকটা কোন ধরনের। এলোপেসিয়া মানে আমরা অনেকেই জানি যেকোনো টাককে বলা হয় এলোপেসিয়া। বাকি রইল এরিয়েটা। এরিয়া থেকে হয়েছে এরিয়েটা অর্থাৎ একটি জায়গা বা একটি এরিয়াতে একটি বিশেষ ধরনের টাককে বলা হয়েছে এলোপেসিয়া এরিয়েটা। সাধারণভাবে টাক পড়া মাথা বললে বোঝায় এমন একটি টাক যে টাক বয়সের সাথে সাথে একটু একটু করে দেখা যায়। যার মূল কারণই হচ্ছে বংশগত। খুশকির কারণে চুল পাতলা হয়ে আস্তে আস্তে টাকের সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু এই টাক সেই টাক নয়। এ ক্ষেত্রে হঠাৎই এ টাক দেখা দিয়ে থাকে এবং মাথায় একটি অথবা কয়েকটি অংশে বা জায়গায় চুল না থাকলে মাথার অন্য সব স্থানের চুলই একদম স্বাভাবিক থাকবে।
অনেক ক্ষেত্রেই রাতে হয়তো একদম স্বাভাবিক থাকবে। হয়তো ভালোভাবে ঘুমিয়েছিল সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে চুল আঁচড়াতে গিয়ে লক্ষ্য করল যে, তার মাথায় একটি স্থানের চুল নেই অথবা সে হয়তো খেয়ালই করেনি। হঠাৎ একজন বলে উঠল, কী রে, তোর মাথার চুলের কী হলো? কিংবা হয়তো কেউ কেউ মন্তব্য করল নিশ্চয়ই মাথার চুল ঘুমের মধ্যে ইঁদুরে কেটেছে কিংবা কেউ বলবেন, না না ইঁদুর নয়, খেয়েছে তেলাপোকায়। আসলে কিছুতেই খায়নি এ চুল। এ চুল পড়ে গেছে। এ চুল ঝরে গেছে। ঝরে যাওয়া চুল বাতাসের সাথে দূরে কোথাও উড়ে গেছে। এ হচ্ছে এ টাকের বিশেষত্ব। তবে এই টাক যে শুধু মাথায় হবে তা কিন্তু নয়। এ ধরনের টাক হতে পারে মাথায়, হতে পারে দাড়ি ও গোঁফে কিংবা ভ্রূতে। প্রথম দিকে এ টাক একটি বা দু’টিতে সীমাবদ্ধ থাকলেও কিছু দিনের মধ্যে বেশ কয়েকটি জায়গায় এমনটি হয়ে থাকতে পারে। আবার একাধিক জায়গায় নাও হতে পারে। এ ধরনের চুল পড়ার একটি বিশেষত্ব হচ্ছে যে, আক্রান্ত স্থানে চুলের কোনো গোড়া খুঁজে পাওয়া যায় না। চকচকে পিচ্ছিল মনে হবে স্থানটি, তবে কখনোও কখনো দু-একটি চুল বা চুলের গোড়া বিদ্যমান থাকতেও পারে এবং আক্রান্ত স্থানের ত্বক দেখলে মনে হতে পারে যেন স্থানটির ত্বক একটু দেবে গেছে। আবার এ রকম দেখা নাও যেতে পারে।
কোনো কোনো রোগীর ক্ষেত্রে এ টাক ক্রমান্বয়ে বেড়ে যেতে পারে। একের পর এক এ ধরনের টাক পড়তে পড়তে পুরো মাথাটাই টাক হয়ে যেতে পারে অর্থাৎ মাথার সব চুলই পড়ে যাবে। এ অবস্থায় টাককে বলা হয় এলোপেসিয়া টোটালিস। অর্থাৎ টোটাল মাথাটিই একটি টাকযুক্ত মাথা। এর থেকেও ক্রমান্বয়ে বিস্তার ঘটতে ঘটতে পুরো দেহের চুলগুলোই পড়ে যেতে পারে। আর যদি এমনটি হয় তবে সেই অবস্থাকে বলা হয় এলোপেসিয়া এরিয়েটা।
কোনো কোনো রোগীর ক্ষেত্রে এ টাক ক্রমান্বয়ে বেড়ে যেতে পারে। একের পর এক এ ধরনের টাক পড়তে পড়তে পুরো মাথাটাই টাক হয়ে যেতে পারে অর্থাৎ মাথার সব চুলই পড়ে যাবে। এ অবস্থায় টাককে বলা হয় এলোপেসিয়া টোটালিস। অর্থাৎ টোটাল মাথাটিই একটি টাকযুক্ত মাথা। এর থেকেও ক্রমান্বয়ে বিস্তার ঘটতে ঘটতে পুরো দেহের চুলগুলোই পড়ে যেতে পারে। আর যদি এমনটি হয় তবে সেই অবস্থাকে বলা হয় এলোপেসিয়া এরিয়েটা।
এলোপেসিয়া এরিয়েটা হওয়ার কারণ কিন্তু এখনো অজ্ঞাত। কিছু কিছু কারণের উল্লেখ থাকলেও তা এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। কেউ কেউ মনে করেন, এ রোগ বুঝি কোনো জীবাণুর আক্রমণের ফলে হয়ে থাকে। আসলে এ ধারণা একেবারেই সঠিক নয়। তবে বংশগত একটা ব্যাপার এ ক্ষেত্রে থাকতে পারে। মানসিক চাপও একটি কারণ হিসেবে ধরা যেতে পারে।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এ ধরনের টাক আপনা আপনি সেরে যায় বা চুল গজায়। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগেই যদি এ ধরনের টাক হয় দেখা যায় তবে ভালো হওয়ার বা আপনা থেকে চুল গজানোর সম্ভাবনা বেশ কম থাকে। যদি খুব বড় একটি স্থান জুড়ে এই টাক হয় কিংবা এ ধরনের সমস্যা যদি পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে হয়ে থাকে তবে সে ক্ষেত্রেও ভালো হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
মাথার ছত্রাক থেকেও টাক হতে পারে। তবে সাধারণত শিশুদের ক্ষেত্রেই মাথার ফাংগাস বা ছত্রাক হয়। সিফিলিস থেকেও এ ধরনের টাক হতে পারে। প্রাথমিক অবস্থায় লুপাস এরিথেমাটোসিস থেকেও এ রকম টাক হতে দেখা যায়। আবার কেউ কেউ নিজের অজ্ঞাতসারে চুল টেনে টেনে তুলে ফেলে এ রকম টাক সৃষ্টি করতে পারেন বা করে থাকেন। কাজেই এর সবগুলোই মাথায় রেখে এ রোগ বা টাকের ডায়াগনোসিস নিশ্চিত করতে হবে।
প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে এই টাক আপনা আপনি ভালো হয়ে যেতে পারে। তবে সব ক্ষেত্রে এমনটি নাও হতে পারে। আবার অনেক ক্ষেত্রে তার বিপরীতও হতে পারে। যেমন আকারে বাড়তে পারে কিংবা নতুন করে বিভিন্ন স্থানে দেখা দিতে পারে। তাই অবহেলা না করে বরং যত দ্রুত সম্ভব একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
শীতে ত্বক ও চুলের পরিচর্যা
শীতকালে ত্বক ও চুল রুক্ষ হয়ে যায়, চেহারা হারায় তার স্বাভাবিক শ্রী, তাই ত্বক ও চুলের বিশেষ যত্ন নেয়া প্রয়োজন। সঠিক ক্রিম, তেল, সাবান, শ্যাম্পুর ব্যবহার, প্রয়োজনীয় খাদ্যগ্রহণ ও জীবনযাত্রার সামান্য পরিবর্তন আনার মাধ্যমে আমরা শীতকালেও ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য বজায় রাখতে পারব।
শীতকালে ক্রিম, সাবান যাই ব্যবহার করবেন লক্ষ রাখবেন তা যেন ময়েশ্চারাইজারযুক্ত হয়। দিনে অন্তত দু’বার ক্রিম ব্যবহার করবেন। আলফা হাইড্রক্সি বা ভিটামিন-ই যুক্ত ক্রিম ব্যবহার করা ভালো। গোসলের আগে শরীরে অলিভ অয়েল মাখতে পারেন অথবা গোসলের শেষে অল্প পানিতে কিছুটা অলিভ অয়েল দিয়ে গা ধুয়ে নিন। তারপর আলত করে গা মুছবেন।
সাধারণত আমরা মনে করি, শীতকালে সানস্ক্রিন প্রয়োজন হয় না। এটি ভুল ধারণা। ত্বক বিশেষজ্ঞের মতে, টঠঅ রশ্মি ত্বকের পক্ষে ক্ষতিকারক। টঠঅ রশ্মি ত্বকে দ্রুত বলিরেখা ফেলতে সহায়তা করে। ত্বকে উপযুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে বার্ধক্যজনিত সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। একথা ঠিক যে, সূর্যরশ্মি সুস্থ ও সুন্দর ত্বকের জন্য প্রয়োজন। এতে যে ভিটামিন পাওয়া যায় তা প্রয়োজনীয়। কিন্তু বেশি সূর্যরশ্মি ও টঠঅ রশ্মি ত্বকে অপূরণীয় ক্ষতি ও অকালবার্ধক্যের কারণ। সানস্ক্রিন টঠঅ-এর দাহ্যতা কমিয়ে দেয়। শীতকালেও নিয়মিত সানস্ক্রিন ব্যবহার করা জরুরি।
শীতে বাতাসের আর্দ্রতা কম থাকে বিধায় ত্বকের এপিডার্মাল লেয়ার থেকে আর্দ্র ভাব কমে যায়। এর ফলে ত্বকে বলিরেখা দেখা দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে ময়শ্চারাইজারযুক্ত ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। তা ছাড়া গোলাপজল ও গ্লিসারিন ৩:১ অনুপাতে ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। শীতের আরেক সমস্যা হচ্ছে ঠোঁট ফাটা ও কালো হয়ে যাওয়া। এর সমাধানও গ্লিসারিন। বারবার জিভ দিয়ে ঠোঁট ভেজাবেন না। আর ঘুমাতে যাওয়ার আগে গ্লিসারিন লাগাবেন।
হাত-পায়ের ত্বক ফেটে গেলে তারপর গ্লিসারিন বা ভেসলিন না মেখে বরং ফেটে যাওয়ার আগেই গ্লিসারিন মেখে নেয়া ভালো।
শীতে ত্বকের যত্নে আপনাকে অবশ্যই কিছু সময় দিতে হবে। মহিলারা যারা নিয়মিত ফেসিয়াল, স্ক্র্যাব ম্যাসাজ করান তারা শীতকালেও নিয়মিত চালিয়ে যান। শীতকালের জন্য ফেসিয়াল ও স্ক্র্যাব ম্যাসাজ বেশ ভালো। কারণ এতে ত্বকের মরা কোষ উঠে যেতে সাহায্য করে।
বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকার কারণে শীতে চুল হয়ে উঠে রুক্ষ এবং খুশকির উপদ্রব হয়। খুশকির জন্য ভালো শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন। প্রয়োজনে ত্বক বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হন। বাজারচলতি বা আকর্ষক বিজ্ঞাপনে মুগ্ধ হয়ে কখনো শ্যাম্পু কিনবেন না। ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী নাইজোরাল শ্যাম্পু কিংবা সেলসান শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন।
চুল সাধারণত দু’রকম, তৈলাক্ত ও শুষ্ক, চুল তৈলাক্ত হওয়ার অর্থ যে ত্বকের ওপর আপনার চুল অর্থাৎ স্ক্যাল্প সেই ত্বকে সেবাশিয়াস গ্রন্থির অতিরিক্ত সেবাম নিঃসরণের ফলে চুল তৈলাক্ত হয়ে পড়ছে। আর চুল শুষ্ক হওয়ার অর্থ যে ত্বকের ওপর আপনার চুল অর্থাৎ স্ক্যাল্প সেই ত্বকে সেবাশিয়াস গ্রন্থির ক্ষরণ খুব কম হয় যার ফলে চুল শুষ্ক হয়ে পড়ছে।
তৈলাক্ত চুলের ক্ষেত্রে স্ক্যাল্প পরিষ্কার রাখা জরুরি। একদিন অন্তর অন্তর চুলের উপযোগী শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুলে ভালো। শুষ্ক চুলের ক্ষেত্রে হটওয়েল থেরাপি ভালো কাজ করে। সামান্য গরম অলিভ অয়েল চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করে তারপর গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে মাথায় জড়িয়ে রাখতে হবে ১৫ মিনিট। এরপর চুলের উপযোগী শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুল ধুয়ে ফেলবেন।
ভেজা চুল কখনো আঁচড়াবেন না। তোয়ালে দিয়েও খুব ঘষে চুল মুছলে চুলের ক্ষতি হয়। ভিজা চুল কখনো বাঁধবেন না।
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে বজ্রাসনে বসে চুল আঁচড়াবেন। এতে চুল পড়া বন্ধ হবে এবং আপনি মানসিক চাপমুক্ত হয়ে ঘুমাতেও পারবেন।
শীতকালে ত্বকের ও চুলের যত্নে কিন্তু আপনাকে খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারেও মনোযোগী হতে হবে। শীতের শাকসবজি ও ফল সুন্দর স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বক ও চুলের জন্য প্রয়োজন। শিম, বরবটি, নানারকম শাক, মটরশুঁটি, ফুলকপি, ক্যাপসিকাম ইত্যাদি প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখুন। দেশী-বিদেশী, হাতের নাগালের সব ফলই প্রতিদিন খাবেন। আপেল, আমলকী কিংবা আমড়া সে যা-ই হোক না কেন।
আরেকটি প্রয়োজনীয় ছোট টিপস দিয়ে আজকের লেখা শেষ করছি। প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে আধাগ্লাস ঈষদুষ্ণ পানিতে এক চামচ মধু ও এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে খেয়ে নেবেন। এই শীতেও সবার ত্বক হবে লাবণ্যময় আর চুল হবে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল।
This comment has been removed by the author.
ReplyDeleteআমার মাথার চুল পরে, মাথায় খুসকি আছে আর মাথা গরম থাকে। আমি কি করতে পারি ? আর সাধারণত তেল কি মাথা ধুয়ার পর চুল সুকানুর পর সুকনা মাথায় বাবহার করা চুলের জন্য ভাল, না ভেজা চুলে বাবহার করা চুলের জন্য ভাল ? PLZ....Help
ReplyDelete